উৎস:
ইসলাহী নেসাব: তা’লীমুদ্দীন
হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:)

উপার্জন:

১. নিজ হাতের উপার্জন সর্বোত্তম কামাই। নবীগণ নিজ হাতে কাজ করেছেন।
২. দেহ ব্যবসা, মিথ্যা তাবিজ-কবজ, শুভ-অশুভ ভবিষ্যত বাণী ইত্যাদির টাকা হারাম। বর্তমানের পীরপুত্ররা এতদুভয় অপকর্মে আক্রান্ত। তারা ব্যভিচারীণীদের থেকে নজরানা গ্রহণ করে। মারাত্মক মারাত্মক তাবিজ কবজ করে, ভবিষ্যত বাণী করে এবং মানুষদেরকে ঠকায়।
৩. ভিক্ষার পেশা সবচেয়ে নিকৃষ্ট, অপমানজনক ও গুনাহের কাজ।
৪. যদি এমনই মারাত্মক বিপদে আক্রান্ত হয় যে, ভিক্ষা না করে কোন উপায়ই নেই, সে তো অপারগতার বিষয়। এমতাবস্থায় উত্তম হলো, কোন সৌভাগ্যবান ধার্মিক, উঁচুমনা, উদার ও সামর্থ্যবান লোকের কাছে চাইবে। তাহলে কিছুটা হলেও লাঞ্ছনা কম হবে।
৫. বিনা লালসায় ও বিনা চাওয়ায় কোথাও থেকে কিছু মিললে তা গ্রহণ করায় কোন ক্ষতি নেই, তা থেকে নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং আল্লাহর রাস্তায় দান করবে।
৬. যে জিনিস শরীয়তে হারাম, তা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নিয়ো না, আল্লাহ তাআলা অন্তরকে দেখেন।
৭. মুফ্ত খাওয়ার চেয়ে সৎসাহস নিয়ে ‍উপার্জন করা এবং অন্যদের খেদমত করা উত্তম। তবে যারা দ্বীনের কাজে ব্যাপৃত, তারা যদি উপার্জনের পথে নামে, তাতে দ্বীনের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন লোকের জন্য উপার্জন করার পন্থা পরিত্যাগ করা জায়েয, বরং কখনো কখনো উত্তম। তাদের খেদমত করা সাধারণ মুসলমানদের দায়িত্ব।
৮. যে বিষয়ে মন পরিষ্কার না হয়, মনে খটকা লাগে, তা পরিত্যাজ্য।
৯. যে পেশায় সবসময় নাপাকীর সাথে লেগে থাকতে হয়, যেমন মেথরের কাজ করা, শিঙ্গা লাগানো- এ ধরনের পেশা থেকে বেঁচে থাকা উচিত।
১০. যে জিনিসকে পাপ কাজের মাধ্যমে বানানো হবে, তা বিক্রি করো না।
১১. এ যুগে টাকা-পয়সা বড় কাজের জিনিস। তার মূল্যায়ন করা উচিত। হালাল পন্থায় উপার্জন করতে লজ্জা করো না, যদিও সমাজে বদনাম হয়।
১২. যে পথে জীবন নির্বাহ হয়, তীব্র প্রয়োজন ছাড়া সে পথ ছেড়ে দিয়ে অন্যপথ অবলম্বন করো না।
১৩. বেচাকেনা ও নিজের হক আদায় করার সময় নরম আচরণ করবে। সংকীর্ণতা ভালো নয়।
১৪. পণ্য বিক্রির জন্য খুব বেশী শপথ করো না। এতে এক-আধটা মিথ্যাও বের হয়ে যায়, তখন বরকত থাকে না।
১৫. ব্যবসা বড় উত্তম জিনিস। আমানত ও সততা তার বড় অংশ। এতে দুনিয়ায় বিশ্বাসভাজন হওয়া যায় এবং আখিরাতে নবী, সিদ্দিক ও শহীদগণের সঙ্গ নসীব হয়।
১৬. ব্যবসার লভ্যাংশ থেকে কিছু দান-খয়রাত করার নিয়মিত অভ্যাস করো। ব্যবসার মধ্যে অনেক অধিক কথা বের হয়ে যায়। দান-খয়রাত করলে তার বিপদ কিছুটা লাঘব হয়।
১৭. তোমার পণ্য বা মূল্যের মধ্যে কোন দোষ-ত্রুটি থাকলে কখনোই তা গোপন রেখো না। পরিষ্কার তা বলে দাও। দোষ গোপন করলে বরকত নষ্ট হয়ে যায়।
১৮. সুদ নেওয়া, দেওয়া, লেখা, সাক্ষী হওয়া এর কোনটাই করো না, এর সবগুলোর উপর লা’নত এসেছে।
১৯. যে সমস্ত বস্ত্ত মেপে বিক্রি করা হয় এবং সেগুলো যদি এক জাতের হয়-যেমন, গমের বিনিময়ে গম-এগুলোর বিনিময় করতে দু’টি বিষয় অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। এক হলো-মানগত পার্থক্য থাকলেও পরিমাণে সমান সমান হতে হবে। দ্বিতীয় হলো- হাতে হাতে অর্থাৎ, নগদে হতে হবে। এ দুই বিষয়ের কোন একটিরও বিপরীত হলে সুদ হয়ে যাবে। আর যদি মেপে বিক্রি হয়, কিন্ত্ত দু’টি ভিন্ন জাতের জিনিস হয়-যেমন গম ও যব। এর মধ্যে সমান সমান হওয়া জরুরী নয়। তবে নগদ হওয়া জরুরী। আর যদি এক জাতের হয়, কিন্ত্ত মেপে বিক্রি করা হয় না-যেমন, বকরীর বিনিময়ে বকরী, তাহলেও সমান সমান হওয়া জরুরী নয়। আর যদি জাতও এক না হয়, এবং মেপেও বিক্রি করা না হয়-যেমন ঘোড়ার বিনিময়ে উট, তখন সমান সমান হওয়াও জরুরী নয়, নগদ হওয়াও জরুরী নয়। এটি হানাফী ফিকাহ অনুযায়ী সুদের বিবরণ।

আজকাল যে সমস্ত গহনা ক্রয় করা বা বানানো হয়, সেগুলোতে বেশীর ভাগ বাজারদরের কমবেশীর কারণে সমান সমানও নেওয়া হয় না এবং নগদেও নেওয়া হয় না। এটি সম্পূর্ণ সুদ। এমতাবস্থায় যে দিকে রূপা (বা সোনা) কম রয়েছে, তার সাথে কিছু পয়সাও যুক্ত করবে। তাহলে রূপার বিনিময়ে রপা হবে, (সোনার বিনিময়ে সোনা হবে) আর অতিরিক্ত রূপা (বা সোনা) পয়সার বিনিময়ে হয়ে যাবে। আর বাকীতে নেওয়ার প্রয়োজন হলে যার সাথে লেনদেন করছে-তার থেকে আলাদাভাবে ঋণ নিয়ে লেনদেন করবে। পরবর্তীতে তার ঋণ শোধ করবে।
২০. অনেক সময় এমন করা হয় যে, টাকা দিয়ে আট আনা পয়সা তখনই নেয়, আর বাকী আট আনা পরবর্তীতে নেয়-এটাও জায়িয নেই। এমন প্রয়োজনই যদি দেখা দেয়, তাহলে টাকাটি আমানত রূপে তার নিকট রেখে দিবে, তার হাতে পুরা পয়সা আসলে তখন আদান-প্রদান করবে।
২১. যদি তুমি খারাপ গমের পরিবর্তে ভালো গম নিতে চাও, আর দ্বিতীয় ব্যক্তি সমান সমান না দেয়, তাহলে প্রথমে নিজের গম উদাহরণ স্বরুপ এক টাকায় বিক্রি করে দেও তারপর যে পরিমাণ গম সে তোমাকে দিবে তা ঐ টাকার বিনিময়ে ক্রয় করো, যা এখন তার দায়িত্বে দেনা রইলো।
২২. যদি রূপা বা স্বর্ণের গহনা- যার মধ্যে অন্য কিছু মিলিত রয়েছে-রূপা বা স্বর্ণের বদলে অর্থাৎ, রূপার গহনা রূপার বদলে এবং স্বর্ণের গহনা স্বর্ণের বদলে ক্রয় করতে বা বিক্রি করতে চাও তাহলে এ বিনিময় বা বেচাকেনা ঐ অবস্থায় জায়িয হবে-যখন গহনার মধ্যে রূপা বা স্বর্ণের পরিমাণ নিশ্চিতভাবে কম হবে এবং মূল্য হিসাবে দেওয়া রূপা বা স্বর্ণের পরিমাণ বেশী হবে। যদি সমান সমান হয় বা অতিরিক্ত হওয়ার শুধু ধারণা হয়, তাহলে এরুপ বেচাকেনা বৈধ হবে না।
২৩. ‍যদি কোন ব্যক্তি তোমার কাছে ঋণী থাকে, আর এ অবস্থায় সে তোমাকে হাদিয়া দেয় বা দাওয়াত করে-তাহলে যদি পূর্ব থেকে তোমাদের পরস্পরের মাঝে এ রীতি চালু না থাকে তাহলে কখনোই তা গ্রহণ করো না। এ থেকেই বন্ধকরুপে রক্ষিত বস্ত্ত ব্যবহার করে যে আয় করা হয় তার অবস্থা বুঝে নাও। কারণ বন্ধকদাতা তোমার কাছে ঋণী। ঋণের চাপে সে তোমাকে বন্ধকী বস্ত্ত দ্বারা উপকৃত হওয়ার অনুমতি দিচ্ছে, তাহলে তা কী করে হালাল হবে?
২৪. কোন কোন লোক বিশেষ কোন জিনিস একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্যে ক্রয় করে। কিন্ত্ত যখন মূল্যের ব্যবস্থা করতে না পারে, তখন ঐ জিনিসটি ঐ বিক্রেতার নিকটই কিছু কম দামে বিক্রি করে দেয়। এমতাবস্থায় যেহেতু বিক্রেতার এই অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অধিকার নেই, তাই এটা সুদ ও নিষিদ্ধ বলে গণ্য হবে। তবে এ রকম প্রয়োজন দেখা দিলে –তার সমাধান এই যে, মূল বিক্রেতা কিছুক্ষণের জন্য ক্রেতাকে পূর্ব নির্ধারিত মূল্য পরিমাণ ধার দিবে। ক্রেতা এ টাকা দ্বারা নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করবে, এরপর ঐ জিনিসটি কম মূল্যে বিক্রেতার নিকট বিক্রি করে দিবে। আর যে টাকা অবশিষ্ট থাকবে-তা ঐ ব্যক্তির দায়িত্বে ঋণ থাকবে। যেমন-দশটাকা দিয়ে তুমি একটা ঘড়ি ক্রয় করেছো, তারপর যখন টাকার ব্যবস্থা হলো না, তখন ঐ বিক্রেতার নিকট ধরে নাও ঘড়িটি আট টাকায় বিক্রি করলে, এ বেচাকেনা সুদ ও নাজায়িয। এমতাবস্থায় প্রয়োজন পড়লে বিক্রেতার নিকট থেকে ঋণ নিয়ে প্রথমে ঘড়ির মূল্য পরিশোধ করো, তারপর ঘড়িটি ঐ লোকের নিকট যত কম মূল্যে ইচ্ছা বিক্রি করো। যে দামে মূল বিক্রেতা ক্রয় করলো- সে পরিমাণ ঋণ তো এখনই আদায় হলো, আর অবশিষ্ট টাকা তোমার দায়িত্বে ঋণ রইল।
২৫. ফল যতক্ষণ পর্যন্ত কাজের উপুযক্ত না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তা ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। কারণ, এ কথা তো জানা নেই যে, ফল থাকবে কি থাকবে না।
২৬. মাল হাতে আসার পূর্বে ক্রয়পত্র (বিল) আসার ভিত্তিতে মাল বিক্রি করো না। বিক্রেতার হাতে মাল চলে আসার পর শুধু ক্রয়পত্র দেখে ক্রেতার জন্য মাল ক্রয় করা বৈধ। তবে মাল দেখার পর এ ক্রয়-বিক্রয় ঠিক রাখা বা না রাখা তার ইখতিয়ারে থাকবে।
২৭. গ্রাম্য লোক কোন শস্য নিয়ে শহরে আসতে থাকলে তাকে আসতে দাও। তারপর তা ক্রয় করো। শহরের বাইরে বেচাকেনা করা ভালো না। এতে কখনো ঐ গ্রাম্য লোককে এ কথা বলে ধোঁকা দেওয়া হয় যে, শহরে এই দামে বিক্রি হবে। আর শহরের অধিবাসীরাও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ, সবাই তার মুখাপেক্ষী হয়ে যায়। যত জনের কাছে ইচ্ছা সে বিক্রি করে।
কোন মানুষ দর-দাম করছে এবং বিক্রেতা এখনো তাকে না করেনি, বরং তার কাছে বিক্রি করা ও না করা উভয় সম্ভাবনই রয়েছে। তাহলে তুমি তার দর-দামকে নষ্ট করে নিজে তা কিনে নিতে আরম্ভ করো না। তবে বিক্রেতা দামকারীকে স্পষ্ট ভাষায় না করে দিলে তখন ক্রয় করায় ক্ষতি নেই। এতে জানা গেলো যে, নিলামের ভিত্তিতে বেচাকেনায় একজনের ডাকের উপ ডাক তোলায় দোষ নেই। কারণ-স্বয়ং বিক্রেতা এখনো তার ডাককে গ্রহণ করেনি ।

কাউকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য পণ্যের দাম এ উদ্দেশ্যে বাড়িও না যে, অন্য লোক এ দাম শুনে আরো বেশী দাম বলবে। ফলে পণ্যটি কিনতে সে বাধ্য হবে।

কোন গ্রাম্য লোক শহরে পণ্য বিক্রি করতে এলে খামাখা তার হিতাকাংখী হয়ে তাকে বিক্রি করতে বাধা দিও না। এবং বলো না যে, আমার কাছে রেখে যাও। আমি সুযোগমত চড়া দামে বিক্রি করে দেবো। বরং তাকে বিক্রি করতে দাও। এতে শহরের অধিবাসীরা কিছুটা কম মূল্যে পণ্যটা পেয়ে যাবে। তবে সে স্পষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হলে তখন এরুপ করায় ক্ষতি নেই। যদি গাভী বা ছাগী বিক্রি করতে চাও, তাহলে ক্রেতাকে ধোঁকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে কয়েক বেলা দুধ দোহন না করে এ উদ্দেশ্যে দুধ আটকিয়ে রেখো না যে, ক্রেতা ওলান দুধে ভরা দেখে প্রতারিত হয়ে অধিক দামে ক্রয় করবে, আর পরে পস্তাবে।

২৮. যে ঘাস নিজে নিজেই উৎপন্ন হয় তা বিক্রি করা জায়িয নেই। যদিও তা তোমার মালিকানাধীন জমিতে উৎপন্ন হোক না কেন, একই ভাবে পানি বিক্রি করাও বৈধ নয়।
২৯. এমন কোন কাজ করো না, যার দ্বারা ক্রেতা ধোঁকা খায়।
৩০. কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি যদি নিজের প্রয়োজনে কোন জিনিস বিক্রি করে, তাহলে তাকে দয়াগ্রস্ত মনে করে চাপ সৃষ্টি করো না। এবং এ জিনিসের দাম কমাইও না, হয় তার সহযোগিতা করো, আর না হয় ‍উপযুক্ত মূল্যে তা ক্রয় করো।
৩১. যে জিনিস তোমার মালিকানায় এবং তোমার হস্তগত নয়, তা কারো নিকট বিক্রি করো না। এ আশায় যে, আমি বাজার থেকে ক্রয় করে এনে তাকে দিয়ে দেবো।
৩২. বন্ধকের মধ্যে এ শর্ত করা যে, যদি এতদিন পর্যন্ত বন্ধকের টাকা আদায় করা না হয়, তবে এটিই বিক্রি করা বলে গণ্য হবে- এটা অবৈধ। মেয়াদ চলে গেলেও বিক্রি বলে গণ্য হবে না।
৩৩. মাপে ধোঁকা দিও না।
৩৪. অগ্রিম মূল্যে কোন পণ্য ক্রয় করলে এবং ফসলের মৌসুমে বিক্রেতা তা দিতে না পারলে যে পরিমাণ টাকা তুমি দিয়েছিলে-সে পরিমাণ টাকা ফিরিয়ে নাও। তার চেয়ে অধিক পরিমাণ টাকা নেওয়া বৈধ নয়। বা ঐ টাকার বিনিময়ে অন্য কোন জিনিস ক্রয় করাও জায়েয নেই। হাঁ, নিজে টাকা ফেরত নিয়ে তার থেকে যা ইচ্ছা ক্রয় করে নিতে পারো।
৩৫. সস্তা মূল্যে পণ্য ক্রয় করে চড়া মূল্যে বিক্রি করা জায়েয আছে। তবে যখন ফসলের অভাবে মানুষের কষ্ট হয়, তখন অধিক চড়া মূল্যের অপেক্ষা করা হারাম এবং লা’নতের কারণ।
৩৬. শাসকের জন্য জোর জোর-জবরদস্তি করে মূল্য নির্ধারণ করার ইখতিয়ার নেই। তবে ব্যবসায়ীকে বুঝানো এবং সৎপরামর্শ দেওয়া ভালো।
৩৭. যদি তোমার দেনাদার ব্যক্তি অভাবী হয়, তাকে চাপ দিও না, বরং সুযোগ দাও, কিংবা কিছু অংশ বা পুরোটা মাফ করে দাও। আল্লাহ তাআলা তোমাকে কিয়ামতের কষ্ট থেকে মুক্তি দিবেন।
৩৮. ‍তুমি কারো কাছে ঋণী থাকলে খারাপ জিনিস দ্বারা তার পাওনা পরিশোধ করো না, বরং তার পাওনার চেয়ে উত্তম জিনিস দিয়ে পরিশোধ করার মানসিকতা রাখো, তবে নেওয়ার সময় এরুপ চুক্তি করা জায়েয নেই।
৩৯. তোমার কাছে দেনা পরিশোধের ব্যবস্থা থাকলে তালবাহানা করা জুলুম বলে গণ্য হবে।
৪০. যদি তোমার দেনাদার অন্যের দ্বারা তোমার ‍ঋণ পরিশোধ করাতে চায় এবং তার থেকে উসুল হওয়ার আশা তোমার থাকে। তাহলে অযথা জিদ করে তাকে জ্বালাতন করো না। বরং এ দায়িত্ব অর্পণকে গ্রহণ করে নাও।
৪১. পারতপক্ষে কারো কাছে ঋণী হয়ো না, আর যদি ঋণী হতে হয়, তাহলে তা পরিশোধ করার চিন্তা রাখো এবং বেপরওয়া হয়ে বসে থেকো না। পাওনাদার তোমাকে কোন কড়া কথা বললে ধৈর্য ধরো। কারণ, তার অধিকার রয়েছে।
৪২. তোমার সামর্থ্য থাকলে কোন ঋণী ব্যক্তির পক্ষ থেকে তার ঋণ পরিশোধ করে দাও।
৪৩. পণ্য মেপে দেওয়ার সময় বাড়িয়ে দাও।
৪৪. যখন কারো ঋণ পরিশোধ করো, তখন তার জন্য দু’আও করো এবং তার শুকরিয়া আদায় করো।
৪৫. শরিকানা কাজে উভয় শরীকের আমানতদারী ও ন্যায়-নিষ্ঠার সাথে থাকা চাই, অন্যথায় বরকত চলে যায়।
৪৬. আমানতে কখনোই খিয়ানত করো না।
৪৭. যে লেনদেন অন্যায়ভাবে চাপ সৃষ্টি করে, কারো প্রভাবের ভিত্তিতে বা কারো লজ্জায় সম্পন্ন হয়, তা হালাল নয়।
হে চাঁদা সংগ্রহকারীরা! এ কথাটি খুব ভালোভাবে চিন্তা করো-সে মালই হালাল, যা পরিপূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত মনে দেওয়া হয়।
৪৮. হাসি-ঠাট্রা করে কোন জিনিস লুকিয়ে তার মালিককে পেরেশান করো না। বিশেষতঃ যদি এমন নিয়ত থাকে যে, যদি জানতে পারে তাহলে রসিকতা বলে চালিয়ে দেবো, অন্যথায় হজম করে ফেলবো। আর বাস্তবেই হাসি-ঠাট্রা করে কিছু লুকালে তা জলদি ফেরত দাও।
৪৯. প্রতিবেশীর প্রতি লক্ষ্য রাখো, ছোট-খাটো বিষয়ে তাদেরকে ছাড় দাও। যেমন তোমার দেয়ালে পেরেক গাড়ছে, আর এতে তোমার কোন ক্ষতিও হবে না, তাহলে তাকে অনুমতি দিয়ে দাও।
৫০. যদি কোন বাড়ী বা জায়গা সুবিধাজনক না হওয়ার কারণে বিক্রি করে দাও, তাহলে অন্য বাড়ী বা জায়গা ক্রয় করে নেয়াতেই কল্যাণ, অন্যথা টাকা হাতে থাকা কঠিন।
৫১. যে বৃক্ষের ছায়ায় মানুষ ও জীবজন্ত্ত বিশ্রাম করে এবং তা তোমার মালিকানাও নয়, এরুপ বৃক্ষ কেটো না, তাহলে জীবন্ত্তর কষ্ট হবে। এতে আযাব হয়।
৫২. ছাগল চরানো নবীগণের রীতি।
৫৩. শ্রমিকদের দ্বারা কাজ নিয়ে পারিশ্রমিক দিতে ত্রুটি করো না। এ মোকদ্দমায় স্বয়ং আল্লাহ তাআলা বাদী হবেন।
৫৪. অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করো না। বিশেষ করে যখন আল্লাহর নাম নিয়ে অঙ্গীকার করো। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তাআলা বাদী হবেন।
৫৫. দুর্ভিক্ষের সময় কিছু কিছু লোক নিজের সন্তানকে এবং কোন কোন জালেম অন্যের সন্তানকে বিক্রি করে। একে বিক্রি করা বা ক্রয় করে গোলাম মনে করা-সব হারাম। এ বিচারেও মহান আল্লাহ তাআলা বাদী হবেন।
৫৬. শরীয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক দিয়ে নাজরানা নেওয়া জায়িয আছে।
৫৭. খাবার রান্না করার জন্য কাউকে আগুন দেওয়ায় ঐ আগুন দ্বারা পাকানো খাবার দান করার মত সওয়াব হয়। লবণ দেয়ারও এমনই সওয়াব।
৫৮. যেখানে প্রচুর পরিমাণ পানি পাওয়া যায়, সেখানে কাউকে পানি পান করানোতে গোলাম আযাদ করার সওয়াব পাওয়া যায়। আর যেখানে অধিক পানি পাওয়া যায় না, সেখানে পানি পান করানোতে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করার মত সওয়াব পাওয়া যায়।
৫৯. যদি কেউ কাউকে এ কথা বলে কিছু দান করে যে, তুমি যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিনের জন্য দিলাম, তোমার মৃত্যুর পর ফিরিয়ে নেবো। ঐ জিনিস পুরোপুরিভাবে তার মালিকানাধীন হয়ে যায়। তার মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারীরা তা পাবে, তাই এ মিথ্যা আশায় সম্পদ নষ্ট করো না। পরে পস্তাতে হবে। তার চেয়ে নিজের কাছে রেখে দাও তাই ভালো।
৬০. এক ছেলেকে দিলে অন্যকেও তেমনটি দাও। অবিচার করা অন্যায়।
৬১. এমন ব্যক্তির হাদিয়া গ্রহণ করো, যে বিনিময় পাওয়ার আশাবাদী নয়, অন্যথায় পারস্পরিক মনোকষ্ট সৃষ্টি হবে। তবে তুমি নিজের পক্ষ থেকে তাকে কিছু বিনিময় দেওয়ার চেষ্টা করো। বিনিময় দেওয়ার কিছু না থাকলে তার প্রশংসা করো, মানুষের সামনে তার দয়া প্রকাশ করো, গুণ গাওয়ার জন্য ‘জাযাকাল্লাহু খায়র’ বলাই যথেষ্ট। দয়াকারীর শোকর আদায় না করলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় হয় না। প্রাপ্ত জিনিস নষ্ট করা যেমন অন্যায় তার জন্য গরিমা দেখানো যে, আমার নিকট এত এসেছে-এটাও অন্যায়।
৬২. পরস্পরে উপহার-উপঢৌকন আদান-প্রদান চালু রাখো। এতে মন পরিষ্কার হয়। ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। এরুপ মনে করো না যে, এত সামান্য জিনিস কিভাবে দেই। যা কিছু হয় অকপটে দিয়ে দাও।
৬৩. কেউ তোমার মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে শুঁকার জন্য সুগন্ধি, মালিশ করার জন্য তেল বা হেলান দিয়ে বসার জন্য বালিশ দিলে তা ব্যবহার করো। তা গ্রহণ করতে অস্বীকার বা অপারগতা প্রকাশ করো না। কারণ, এসব বস্ত্ততে এমন বড় কোন দয়া নেই, যার বোঝা তুমি বহণ করতে পারবে না। অথচ এতে অন্যে খুশি হয়।
৬৪. নতুন ফল প্রথম যখন তোমার নিকট আসে, সেটা চোখে মুখে লাগাও। তারপর কোন শিশু থাকলে তাকে দিয়ে দাও।
৬৫. তোমার দায়িত্বে কারো ঋণ, আমানত বা অন্য কোন হক থাকলে অসীয়ত করে লিখে নিজের কাছে রাখো।

বিবাহ-শাদী:

১. প্রয়োজন ও সামর্থ্য থাকলে বিবাহ করা উত্তম। আর যদি প্রয়োজন আছে, সামর্থ্য নেই, তাহলে বেশী বেশী রোযা রাখার দ্বারা কামভাব হ্রাস করবে।
২. বিবাহের ক্ষেত্রে কনের দ্বীনদারীর প্রতি অধিক লক্ষ্য রাখো। সম্পদ, সৌন্দর্য ও বংশ গরিমার পিছনে বেশী পড়ো না।
৩. সফর থেকে বাড়ী ফিরলে হঠাৎ বাড়ীতে যেয়ো না। এতটুকু সময় বিলম্ব করো যে, স্ত্রী সাজগোগ করতে পারে। কারণ, স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী বেশীর ভাগ অপরিষ্কার থাকে, হঠাৎ এ অবস্থা দেখে তার প্রতি তোমার ঘৃণা জন্মাতে পারে।
৪. কোন ব্যক্তি যদি তোমার আপনজনের জন্য বিবাহের পয়গাম পাঠায়, তাহলে সে ক্ষেত্রে অধিক লক্ষণীয় ঐ ব্যক্তির দ্বীনদারী ও সৎস্বভাব ধনদৌলত, প্রভাব-প্রতিপত্তি ও উঁচু বংশের খোঁজে থাকলে কেবলই অকল্যাণ হয়।
৫. ঘটনাচক্রে কোন অবিবাহিত নারী ও পুরুষের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক হলে তাদেরকে পরস্পরে বিবাহ দেওয়াই উত্তম।
৬. ঐ বিবাহে বরকত অধিক, যার মধ্যে খরচ কম হয় ও মোহর হালকা হয়।
৭. অনেক মহিলারই অভ্যাস থাকে যে, পরনারীর রুপ-আকৃতি নিজের স্বামীর সামনে বর্ণনা করে। এটা অত্যন্ত খারাপ কাজ। স্বামীর মনে ঐ নারী ধরে গেলে নিজে তখন কেঁদে ফেরে।
৮. এক কাপড়ে দুই পুরুষ, একইভাবে এক কাপড়ে দুই নারী থাকা মোটেই ঠিক নয়। এটা নির্লজ্জতার কাজ। যেমনিভাবে এক পুরুষের অন্য পুরুষের সতর দেখা গুনাহ, তেমনিভাবে এক নারীর জন্য অন্য নারীর দেহ-নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত দেখা গুনাহ। অধিকাংশ মহিলা এ ব্যাপারে সতর্ক থাকে না।
কোন নারীর প্রতি হঠাৎ চোখ পড়ে গেলে সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নাও। তার কল্পনা মনে রয়ে গেলে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে নেওয়া উচিত। এতে ঐ কুমন্ত্রনা দূর হয়ে যায়।
৯. কোন নারীকে বিবাহ করার ইচ্ছা হলে, সুযোগ হলে তাকে এক নজর দেখে নাও, যাতে বিবাহের পর তাকে অপছন্দ না হয়।
১০. পেশাব-পায়খানা বা স্ত্রী সহবাসের তীব্র প্রয়োজন ছাড়া উলঙ্গ হয়ো না। ফেরেশতাদেরকে এবং আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করা উচিত।
১১. নির্জনে পরনারীর নিকট বসা প্রাণনাশকারী বিষতুল্য এবং মারাত্মক গুনাহ। একইভাবে পরনারীর সঙ্গে ভ্রমণ করাও নিষিদ্ধ। আজকাল পীর ও আত্মীয়দের ক্ষেত্রে মোটেও সতর্কতা অবলম্বন করা হয় না। পরনারী তাকে বলে, যে নারীর সঙ্গে সারাজীবনে কোন এক সময়ও বিবাহ হালাল হতে পারে।
১২. বিনা প্রয়োজনে নারীদের জন্য পরপুরুষকে দেখা নিষেধ। অধিকাংশ নারীর উঁকিঝুকি দিয়ে দেখার অভ্যাস থাকে, যা বড়ই মন্দ কাজ।
১৩. সন্তানের হক হলো- তার ভালো নাম রাখো। বিদ্যা-বুদ্ধি শিক্ষা দাও। যুবক হলে বিবাহ করিয়ে দাও। অন্যথায় কোন গুনাহর কাজ হয়ে গেলে তার বিপদ তোমার ঘাড়ে চাপবে। অনেক মানুষ বিবাহ না দিয়ে বসিয়ে রাখে, এটি অত্যন্ত অসতর্কতার কাজ।
১৪. যদি কোন জায়গায় কোন ব্যক্তি বিবাহের পয়গাম দিয়ে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে উত্তর না পায় অথবা সে নিজে পরিত্যাগ না করে, সেখানে তুমি বিবাহের পয়গাম দিও না।
১৫. যদি কোন ব্যক্তি দ্বিতীয় বিবাহ করতে চায় তাহলে ঐ মহিলার বা তার আত্মীয়দের প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার শর্ত লাগানো উচিত নয়। বিবাহ হয়ে গেলে নিজের ভাগ্যের উপর সন্ত্তষ্ট থাকা উচিত।
১৬. বিবাহ মসজিদে হওয়া উত্তম, যাতে করে জানাজানিও ভালো করে হয় এবং জায়গাও বরকতে হয়।
১৭. শিশুর দুধপানের ক্ষেত্রে খুব সতর্কতা দরকার। দুধ-সম্পর্কের নিশ্চিত যাচাই না করে নারী-পুরুষ সামনাসামনি আসবে না। যেখানে দুধ শরীক হওয়ার সন্দেহও থাকে সেখানে বিবাহ করবে না।
১৮. স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক গোপন বিষয়সমূহ বন্ধু-বান্ধব বা সখী-বান্ধবীদের নিকট আলোচনা করা আল্লাহ তাআলার নিকট খুব অপছন্দীয়। অধিকাংশ বর-বধূ এর পরওয়া করে না।
১৯. ওলীমা করা মুস্তাহাব, কিন্ত্ত এতে আড়ম্বর ও অহংকার করবে না। হুযূর সারওয়ারে আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার এক স্ত্রীর ওলীমা দুই সের যব দ্বারা করেছেন। হযরত সফিয়া রাযিআল্লাহু তাআলা আনহার ওলীমা খুরমা, পনির ও ঘি মিশ্রিত এক জাতীয় খাদ্য দ্বারা করা হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সর্ববৃহৎ ওলীমা হয়েছিলো হযরত যায়নব রাযিআল্লাহু আনহার বিবাহের সময়। তাতে একটি ছাগল জবাই করা হয়েছিলো। এবং লোকদেরকে পেট ভরে গোশত-রুটি খাওয়ানো হয়েছিলো।
২০. একাধিক স্ত্রী হলে, তাদের মাঝে সমতা রক্ষা করো।
২১. স্ত্রীর বক্র স্বভাবের জন্য ধৈর্য ধরো। তার সাথে কঠোরতা করো না। তার একটি বিষয় অপছন্দ হলে আরেকটি পছন্দ হবে। বিনা কারণে তাকে প্রহার করো না। আর প্রয়োজন হলেও বেশী মেরো না। মুখের উপর কখনোও আঘাত করো না। এমন করলে রাতের বেলা তার সাথে আদর-সোহাগ করতে লজ্জাও হবে। তার মনকে খুশী করো। গালাগালি করো না। রাগ হয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যেও না। বেশী রাগ হলে অন্য বিছানায় শুয়ে থাকো। যখন দেখো যে, কোনভাবেই বনিবনা হচ্ছে না, তাহলে তাকে ছেড়ে দাও।
২২. স্ত্রীর উচিত স্বামীর আনুগত্য করা। তাকে খুশী করা। তার হুকুম অমান্য না করা, বিশেষ করে যখন সে সহবাসের জন্য আহবান করে। তার সামর্থ্যের অধিক ভরণপোষণ চাইবে না। তার মুখে মুখে ঝগড়া করবে না। তার অনুমতি ছাড়া নফল নামাযও পড়বে না, নফল রোযাও রাখবে না। তার বিনা অনুমতিতে তার সম্পদ কাউকে দিবে না। নিজেও প্রয়োজনাতিরিক্ত নিবে না। বিনা অনুমতিতে কাউকে ঘরের ভিতরে আসতে দিবে না। অনন্যোপায় না হলে নিজের পক্ষ থেকে তালাক চাবে না।
২৩. স্ত্রীকে ‍উত্তেজিত করে স্বামীর সাথে ঝগড়া করাবে না বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করাবে না।
২৪. কেউ তার স্ত্রীকে সাধারণ মারপিট করলে অন্যদের জন্য এর কারণ জিজ্ঞাসা করা অভদ্রতা। হয়ত বা সে কারণ অন্যের নিকট বলার মত নয়। যেমন, সে সহবাসে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আর এ জন্য তাকে মেরেছে। তাহলে সে কি উত্তর দিবে?
২৫. বিনা প্রয়োজনে তালাক দিও না।
২৬. হায়েয অবস্থায় তালাক দিও না। কারণ, হতে পারে হায়েযের কারণে সহজাত ঘৃণার উদ্রেকের ফলে বিনা প্রয়োজনে তালাক দেওয়া হবে।
২৭. ‘হালালার’ শর্ত করা (অর্থাৎ, এ শর্তে বিবাহ দেওয়া যে, স্বামী স্ত্রীর সাথে সহবাস করে তাকে তালাক দিবে) চরম নির্লজ্জতার কথা।
২৮. নিছক লক্ষণের ভিত্তিতে স্বীয় স্ত্রীকে ব্যভিচারী বিশ্বাস করা বা সন্তানের গঠনাকৃতি দেখে ‘এ সন্তান আমার নয়’ বলা মারাত্মক গুনাহ। স্ত্রী মন্দচারী হলে এবং তার কোন ব্যবস্থা করতে না পারলে তালাক দেওয়া উচিত। কিন্ত্ত তার সাথে ভালোবাসা থাকলে এবং এরুপ ভয় হলে যে, তালাকের পর আমিও তার সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে যাবো, তাহলে তালাক দিবে না, তবে নিয়ন্ত্রন করতে সাধ্যমত ব্যবস্থা নিবে।
২৯. যদি স্ত্রীকে স্বচক্ষে ব্যভিচার করতে দেখে, তাহলে তাকে হত্যা করায় আল্লাহর নিকট পাপী সাব্যস্ত হবে না। যদিও শরীয়তসম্মত প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত না হওয়ায় দুনিয়ার শাসক তার বদলা গ্রহণ করবে।
৩০. অহেতুক বিনা আলামতে স্ত্রী সম্পর্কে কুধারনা করা অজ্ঞতা ও অহংকার। আর আলামত পাওয়া সত্ত্বেও না দেখার ভান করা নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা।
৩১. বিবাহের ব্যাপারে কেউ তোমার সাথে পরামর্শ করলে হিতাকাংখিতার দাবী হলো এ জায়গা সম্পর্কে কোন মন্দ বিষয় তোমার জানা থাকলে তা প্রকাশ করে দেওয়া। এটা গীবতের অন্তর্ভুক্ত নয়। এমনিভাবে যে স্থলে ব্যক্তি বিশেষের নিন্দা করা তোমারা উদ্দেশ্য নয়, বরং কারো কল্যাণ কামনায় তার দোষ বর্ণনা করতে হয়, সেখানে শরীয়তে এর অনুমতি আছে। বরং ক্ষেত্র বিশেষে এটা ওয়াজিব।
৩২. যদি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও স্বামী কার্পণ্য করে, স্ত্রীকে যথেষ্ট পরিমাণ ভরণপোষণ না দেয়, তাহলে স্ত্রী স্বামীর অগোচরে তার খরচ নিতে পারে। তবে অপচয়ের জন্য প্রয়োজনাতিরিক্ত নেওয়া জাযেয নেই।
৩৩. আল্লাহ তাআলা সম্পদ দিলে, প্রথমে নিজেদের প্রয়োজন পুরা করবে, তারপর দান-দক্ষিণা করবে।

প্রশাসনিক বিধান:

১. যদি কোন কাফির তোমাকে আহত করে অথবা তোমার কোন অঙ্গহানী করে, আর তুমি এর প্রতিশোধ নিতে আরম্ভ করলে সাথে সাথে সে কালিমা পড়ে, তখন এ কথা মনে করে তাকে কখনোই হত্যা করো না যে, সে প্রাণ রক্ষার্থে কালিমা পড়েছে। এ বিধান থেকে ইসলামের সহনশীলতা, দয়া ও সত্যের মূল্যায়নের পরিমাপ করা উচিত।
২. কোন কাফির প্রজাকে বিনা অপরাধে হত্যা করা মারাত্মক গুনাহ। যা বেহেশত থেকে বঞ্চিত করে দেয়।
৩. যে কোনভাবে আত্মহত্যা করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
৪. মসজিদে শাস্তি প্রয়োগ করবে না, হয়ত অনিচ্ছায় পেশাব-পায়খানা হয়ে যাবে।
৫. কোন মুসলমান কোন যিম্মি কাফিরকে হত্যা করলে তার বদলে তাকে হত্যা করা হবে।
৬. যদি মুসলিম সেনাবাহিনীর সাধারণ কোন ব্যক্তিও কাফির বাহিনীকে নিরাপত্তা প্রদান করে তাহলে তার উচ্চপদস্থ ও অধীনস্থ সমস্ত মুসলমানের উপর তা মানা আবশ্যক। কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে পারবে না। তবে হাঁ, যদি লড়াই করাই কল্যাণকর হয়, তাহলে কাফিরদেরকে নতুনভাবে অবহিত করবে যে, আমরা আমাদের চুক্তি প্রত্যাহার করছি।
৭. যদি একাধিক মানুষ মিলে কাউকে হত্যা করে, তাহলে সবাইকে হত্যা করা হবে এবং সবাই গুনাহগার হবে।
৮. যে ব্যক্তি চিকিৎসা শাস্ত্রে দক্ষ নয়, তার ভুল চিকিৎসার কারণে যদি কেউ মারা যায়, তাহলে তার থেকে রক্তপণ নেওয়া হবে।
৯. নিজের জানমাল, দ্বীন ও আবরু হেফাজতের জন্য লড়াই করা জায়েয আছে। এতে নিজে মারা গেলে শহীদ হবে, আর প্রতিপক্ষ মারা গেলে এজন্য সে দায়ী হবে না।
১০. খেলাচ্ছলেও কংকর নিক্ষেপ করা বা মাটির গুটি চালানো নিষিদ্ধ। হঠাৎ কারো দাঁত বা চোঁখ নষ্ট হতে পারে।
১১. যদি মানুষের মধ্য দিয়ে কোন ধারালো জিনিস নিয়ে যেতে হয়, তাহলে ধারালো দিক আড়াল করে নেওয়া উচিত, যাতে কারো গায়ে না লাগে।
১২. হাছিচ্ছলেও ধারালো জিনিস দ্বারা কারো দিকে ইঙ্গিত করা নিষিদ্ধ, হয়ত হাত থেকে ‍ছুটে গিয়ে আঘাত লাগবে।
১৩. এমন পাশবিক শাস্তি, যা অসহ্য হয়, যেমন রোদে খাড়া করে তেল ছোড়া, চাবুক দিয়ে নির্দয়ভাবে মাত্রাতিরিক্ত প্রহার করা মারাত্মক গুনাহ।
১৪. খোলা তরবারী বা চাকু কারো হাতে দিও না। হয় বন্ধ করে দাও, অথবা মাটিতে রেখে দাও, সেখান থেকে অপর ব্যক্তি তুলে নিবে।
১৫. কোন মানুষ বা পশুকে আগুনে পোড়ানো জায়িয নেই। হত্যাযোগ্য ব্যক্তিকে হাত-পা কেটে ফেলে রাখা, যাতে ধুকে ধুকে মারা যায়-জায়েয নেই।
১৬. পাখির বাচ্চা বাসা থেকে বের করে আনা, যাতে এর মা-বাবা কষ্ট পায়-জায়েয নেই।
১৭. যার যাদু দ্বারা মানুষের ক্ষতি হয়, অথচ সে এ থেকে ফিরে আসে না, সে হত্যার যোগ্য।
১৮. যে অপরাধী ব্যভিচারের কথা স্বেচ্ছায় স্বীকার করে, যতদূর সম্ভব তার কথা প্রত্যাখান করবে। কিন্ত্ত সে যদি তার স্বীকারোক্তির উপর অবিচল থাকে এবং বারবার স্বীকার করে-তাহলে শাস্তি প্রয়োগ করবে।
১৯. এমন সেচ্ছা স্বীকৃত অপরাধী যদি শাস্তি প্রদানকালে নিজের স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করে তাহলে তাকে ছেড়ে দেওয়া উচিত।
২০. যদি গর্ভবর্তী নারীর ব্যভিচারের অপরাধ প্রমানিত হয় তাহলে বাচ্চা প্রসব করার আগ পর্যন্ত এবং অন্য কোন দুগ্ধদানকারী না থাকলে দুধ না ছাড়ানো পর্যন্ত প্রস্তরাঘাতে তাকে হত্যা করা হবে না।
২১. শাস্তিপ্রাপ্তির পর অপরাধীকে সে ব্যাপারে তিরস্কার ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
২২. যে ব্যভিচারী শাস্তির যোগ্য হয় এবং অসুস্থতার জন্য শাস্তি দিলে মরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে তার শাস্তি মওকুফ রাখবে।
২৩. শাস্তি দু’ ধরনের। এক হলো, নির্ধারিত, আরেক হলো, বিচারকের হাতে অর্পিত। প্রথম প্রকারকে ‘হদ্দ’ এবং দ্বিতীয় প্রকারকে ‘তা’যীর’ বলে। হদ্দের ক্ষেত্রে সম্ভ্রান্ত-অসম্ভ্রান্ত, সম্মানী-অসম্মানী সবাই সমান। এ ক্ষেত্রে কারোই ছাড় নেই। তবে ‘তা’যীর’ এর ক্ষেত্রে সম্ভ্রান্ত ও সম্মানিত ব্যক্তির ব্যাপারে ছাড় দেওয়া উত্তম। বা ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়াই যথেষ্ট।
২৪. মিথ্যা মোকদ্দমা বা সত্য না মিথ্যা তা জানা নেই এ ধরনের মোকদ্দমা পরিচালনা করা বা এতে কোন ধরনের সহযোগিতা করা নিষিদ্ধ।
২৫. ঔষধের মধ্যেও মদ ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
২৬. নেশাকর বস্ত্তর বৈশিষ্ট্য হলো, অল্প থেকে ধীরে ‍ধীরে বাড়তে থাকে, তাই নেশাকর বস্ত্ত অল্প ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

দেশ ও রাষ্ট্র পরিচালনা সংক্রান্ত বিধান:

১. যে ব্যক্তি নিজের থেকে রাষ্ট্রীয় পদের জন্য আবেদন করে, সে পদ পাওয়ার যোগ্য নয়, সে স্বার্থপর। আর যে পদ থেকে দূরে থাকতে চায়, সে অধিক ন্যায়বিচার করবে। তাকেই রাষ্ট্রীয় পদ ও শাসন-ক্ষমতা প্রদান করা উচিত।
২. দেশপ্রধানকে হেয় প্র্রতিপন্ন করা জায়েয নেই।
৩. শাসকদের জন্যও নির্দেশ যে, তারা প্রজাসাধারণের সাথে নরম ব্যবহার করবে, কঠোরতা করবে না।
৪. শাসকদের নিকট গিয়ে তাদের তোষামোদ করা, তাদের হাঁ-তে হাঁ মিলানো এবং তাদেরকে অন্যায়-অত্যাচারের পন্থা বলে দেওয়া ও তাতে সহযোগিতা করা চরম ঘৃণ্য কাজ।
৫. সত্য কথা বলতে শাসকদের প্রভাবে দমে যেয়ো না।
৬. বিনা প্রয়োজনে জনসাধারণের দোষ ও অপরাধ তালাশ করা শাসকদের জন্য সমীচীন নয়।
কবি বলেন- ‘কোন মানুষই দোষমুক্ত নয়।’
৭. বিনা অপরাধে কারো দিকে ট্যারা চোখে তাকানো-যার দ্বারা সে ভয় পায়-জায়েয নেই।
৮. শাসকরা অত্যাচার করলে তাদেরকে মন্দ বলো না। তখন বোঝো যে, আমার দ্বারা প্রকৃত শাসক আল্লাহ তাআলার নাফরমানী হয়েছে। এটি তার শাস্তি। নিজের অবস্থা শুধরিয়ে নাও, আল্লাহ তাআলা শাসকদের অন্তর নরম দিবেন।
৯. শাসকদের জন্য এমন জায়গায় বসা জায়েয নেই, যেখানে বিচারপ্রার্থী নিজেও যেতে পারে না বা অন্যের মাধ্যমেও অভিযোগ পৌঁছাতে পারে না।
১০. ক্রোধান্বিত অবস্থায় জ্ঞান-বুদ্ধি ঠিক থাকে না। সে সময় বিচারের রায় দেওয়া উচিত নয়।
১১. ঘুষ নেওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এমনকি হাদিয়া স্বরুপ হলেও।
১২. কারো হকের ব্যাপারে মিথ্যা দাবী, মিথ্যা সাক্ষ্য, মিথ্যা শপথ ও মিথ্যা অস্বীকৃতি সবই অন্যায়।
১৩. নিজের হক প্রমাণ করার জন্য চেষ্টা করা খারাপ নয়, বরং এক্ষেত্রে অলসতা করে বসে থাকাকে ভীরুতা বলা হয়েছে এবং চেষ্টা সত্ত্বেও ব্যর্থ হলে অধিক দুশ্চিন্তা করাও ঠিক নয়, তখন ভাববে যে, প্রকৃত শাসক আল্লাহ তাআলার এটাই মঞ্জুর ছিলো।
১৪. (কারো প্রতি কোন অপরাধ সম্পর্কে) বদ্ধমূল ধারণা বা দৃঢ় সন্দেহ হলে আইনের হাতে তুলে দেয়ার অনুমতি রয়েছে।
১৫. যানবাহন চালনা ও তীরান্দাজী চর্চার নির্দেশ রয়েছে।
১৬. ঘোড়ার লেজ, ঘাড় ও কপালের চুল কেটো না। কারণ লেজের চুল দ্বারা মাছি তাড়ায়, ঘাড়ের চুল দ্বারা সে উষ্ণতা লাভ করে, আর কপালের চুলে বরকত রয়েছে।

ভ্রমণ সংক্রান্ত বিধান:

১. পথে বাহন পশুকে মাঝে মাঝে ঘাস খাওয়ানোর জন্য ছেড়ে দাও। ‍শুষ্ক মওসুম হওয়ার ফলে পথে ঘাস না থাকলে সময় নষ্ট করো না, দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে তার জন্য ঘাস-পানির ব্যবস্থা করো। পথিমধ্যে কোথাও দাঁড়াতে হলে পথ ছেড়ে দাঁড়াও।
২. যতদূর সম্ভব ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকো।
৩. কাজ শেষ হলে দ্রুত বাড়ীতে চলে আসো। অনর্থক ভ্রমণের কষ্ট করো না।
৪. রাতের ভ্রমনে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছা যায়।
৫. ভ্রমণকালে সাথীদের মধ্য থেকে কোন একজনকে নিজেদের আমীর বানানো উত্তম। নিজেদের পরস্পরে কোন বিষয়ে মতপার্থক্য বা ঝগড়া হলে তখন সমাধান সহজ হয়।
৬. দলপ্রধানের সবার প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত। কেউ রয়ে গেলো কিনা, কারো বাহন ইত্যাদির কষ্ট হচ্ছে কিনা, সে ব্যাপারে সজাগ থাকা উচিত।
৭. কাফেলা গন্তব্যে পৌঁছলে বিক্ষিপ্ত হয়ে অবস্থান নিবে না। সবাই কাছাকাছি সম্মিলিতভাবে অবস্থান করবে, যেন কারো কোন বিপদ হলে অন্যেরা তার সাহায্য করতে পারে।
৮. বাহনের স্বল্পতার কারণে সহচরদের মধ্যে পালা নির্ধারণ করতে হলে সবার প্রতি ন্যায়বিচার করা উচিত। নিজেকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত নয়। নির্ধারিত পালা মোতাবেক সবার কাজ করা উচিত। এমনকি কাফেলা প্রধানের নিজের ক্ষেত্রেও।
৯. যদি পথ চলার মাঝে কথা বলার জন্য দীর্ঘ সময় থামতে হয়, তাহলে বাহন থেকে নেমে পড়া উচিত। তার উপর বসে বসে দীর্ঘমসয় কথা বলবে না। এতে পশুর কষ্ট হয়। যানবাহনকে পথ চলার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার উপর বসে কথা বলার জন্য নয়।
১০. গন্তব্যে পৌঁছে প্রথমে যানবাহনের উপর থেকে আসবাব-পত্র ও জিন ইত্যাদি খুলে ফেলো, অন্যান্য কাজ পরে করো।
১১. আল্লাহ তাআলা যানবাহনের সচ্ছলতা দিলে পদাতিকদেরকে তাতে আরোহণ করাও। এরুপ করো না যে, তাদের পায়ে তো ফোসকা পড়ছে, আর তুমি নামের জন্য (প্রয়োজনাতিরিক্ত) বাহনের শোভাযাত্রা করছো।
১২. শত্রুর মোকাবেলার উদ্দেশ্যে অভিযান চালাতে হলে যতদূর সম্ভব তা গোপন রাখার চেষ্টা করো। তবে প্রকাশ করায় কোন উপকারিতা থাকলে তখন প্রকাশ করাই উচিত।
১৩. যেসব লোক লড়াইয়ের উপযুক্ত নয় বা তাদের লড়ার ইচ্ছা নেই, যেমন-নারী, শিশু, বৃদ্ধ, শ্রমিক, কাজের লোক, কাফির পন্ডিত ও সাধক-তাদেরকে যুদ্ধের সময় হত্যা করা নিষেধ।
১৪. শত্রুকে নিরাপত্তা দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করা মারাত্মক গুনাহ।
১৫. দূতকে কখনো হত্যা করা উচিত নয়।
১৬. শত্রুপক্ষের দূরভিসন্ধি গোপন করা অন্যায়।
১৭. যে ব্যক্তি কাফির প্রজার প্রতি অত্যাচার করবে বা তার অধিকার হরণ করবে বা তাকে অন্যায়ভাবে কষ্ট দিবে বা তার অসম্মতিতে তার কোন জিনিস আত্মসাৎ করবে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবেন।
১৮. কোন পশু জবাই করতে হলে ছুরি খুব ধার করে নাও। তাকে কষ্ট দিয়ে মেরো না। গলা টিপে হত্যা করায় পশুর অনেক কষ্ট হয়। আল্লাহ তাআলা তা হারাম করেছেন।
১৯. কুকুর কষ্টদায়ক প্রাণী। অসহায় বহিরাগতকে দংশন করে, তাছাড়া এ পশুর মধ্যে এমন এক খারাপ চরিত্র রয়েছে যে, তার মধ্যে স্বজাতির প্রতি দয়ামায়া নেই। স্বজাতিকে দেখলে ঘেউ ঘেউ শুরু করে দেয়। এ কারণে বিনা প্রয়োজনে কুকুর পালা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০. পশুদেরকে পরস্পরে লড়াই করানো-যেমন, মোরগ, পাঁঠা (ষাঢ়, উট, ঘোড়া) ইত্যাদির লড়াই করানো হয়-নিষেধ।
২১. শিকারে লিপ্ত থাকা অধিকাংশ সময় মানুষকে অকেজো ও নির্বোধ বানিয়ে দেয়। নিজের প্রয়োজনীয় কাজ থেকে উদাসীন করে দেয়, তাই এরুপ করা ঠিক নয়।