উৎস:
ইসলাহী নেসাব: সাফাইয়ে মুয়ামালাত
হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:)

মাসআলাঃ দানের জন্যে যাকে দান করা হয়েছে তার দখলে নেওয়া শর্ত। যায়েদ যদি মৌখিকভাবে আমরকে বলে যে, আমি তোমাকে এটি দান করলাম এবং আমর বললো যে, আমি গ্রহণ করলাম। কিন্তু জিনিসটি আমর নিজের দখলে নিলো না, তাহলে এ দান শুদ্ধ হবে না। যথাপূর্ব তা যায়েদের মালিকানাধীনই থেকে যাবে।

মাসআলাঃ যে জিনিসটি দান করা হচ্ছে তা যদি যৌথ মালিকানাধীন হয়, আর তাদের মধ্যে থেকে কোন একজন তার অংশ কাউকে দান করতে চায় তাহলে দেখতে হবে যে, জিনিসটি বন্টনযোগ্য কিনা। যদি বন্টনযোগ্য না হয়-অর্থাৎ. যে কাজের জন্যে জিনিসটি তৈরী করা হয়েছে বন্টন করলে তা আর সে কাজের উপযুক্ত থাকবে না-যেমন, ঘোড়া, পেষণযন্ত্র বা ছোট গোসলখানা, যৌথ মালিকানাধীন হওয়ার পরও এমন জিনিস দান করা জায়েয আছে।

আর যদি জিনিসটি বন্টনযোগ্য হয়-যেমন, ঘর, বাগান বা শস্য-তার বিধান এই যে, যদি বন্টন করার পর দান করে থাকে বা দান করার পর বন্টন করে দখলে দিয়ে থাকে তাহলে তো দান সঠিক হবে। আর যদি বন্টনই না করে তাহলে এমন যৌথ জিনিস দান করা দুরস্ত নয়। তবে যদি সমস্ত শরীক সম্মত হয়ে জিনিসটি কোন একজনকে দান করে দেয় আর সে ব্যক্তি নিজের দখলে নিয়ে নেয়, তাহলে তা শুদ্ধ হবে। আর যদি কোন ব্যক্তি এমন জিনিসকে দু্ই ব্যক্তিকে দান করে দেয়, তাহলে ইমাম মুহাম্মাদ (রহঃ)এর নিকট দুরস্ত আছে।

মাসআলাঃ যে জিনিসটি দান করতে চাচ্ছে, তা যদি পূর্ব থেকেই যাকে দান করতে চাচ্ছে তার দখলে থেকে থাকে-আমানত হিসাবে হোক, ধার হিসাবে হোক বা যে কোন উপায়ে-তাহলে আর নতুন করে দখলে নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। পূর্বের দখলে থাকাই যথেষ্ট হবে।

মাসআলাঃ নাবালেগ সন্তানকে কোন জিনিস দান করলে ঐ সন্তানের তা দখলে নেওয়া জরুরী নয়, বরং দান সঠিক হওয়ার জন্যে বাপের দখলই যথেষ্ট।

মাসআলাঃ এমনিভাবে অন্য কোন মানুষ যদি নাবালেগকে দান করতে চায় সে ক্ষেত্রেও নাবালেগের দখল করা জরুরী নয়, তার বাপ দখল করলেই যথেষ্ট হবে। আর নাবালেগ যদি বুঝমান হয়, তাহলে সেও দখল করতে পারে। নাবালেগ যদি দখল না করে আর তার অন্য কোন আত্মীয় তার পক্ষ থেকে দখল করে তাহলে বাপের বর্তমানে অন্যের দখল যথেষ্ট হবে না। তবে বাপ যদি মরে গিয়ে থাকে তখন ঐ নাবালেগ যার অধীনে প্রতিপালিত হচ্ছে সে দখল করলে শুদ্ধ হবে।

বাপ যদি নাবালেগা মেয়েকে বিবাহ দিয়ে স্বামীর বাড়ি পাঠিয়ে থাকে, তখন স্বামী দখল করলেও যথেষ্ট হবে। কারণ, বাপ যখন বিবাহ দিয়ে দিলো, তখন এ সমস্ত বিষয়ের অধিকারও স্বামীর হাতে দিয়ে দিলো, আর যদি স্বামীর বাড়িতে না গিয়ে থাকে তাহলে স্বামী দখল করলে যথেষ্ট হবে না।