ওসীয়ত এবং মীরাসের বিধান

উৎস:
ইসলাহী নেসাব: সাফাইয়ে মুয়ামালাত
হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:)
মাসআলাঃ মধ্যম ধরনের কাফনের ব্যবস্থা এবং ঋণসমূহ পরিশোধ করার পর-যার মধ্যে মহরও অন্তর্ভুক্ত-মৃত ব্যক্তির যে সম্পদ বাঁচবে তার এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত ওসীয়ত করা জায়েয। এর অতিরিক্ত বাতিল। তবে প্রাপ্তবয়স্ক ওয়ারিশরা শুধুমাত্র নিজের অংশের মধ্যে অতিরিক্ত ওসীয়ত বাস্তবায়নের অনুমতি দিতে পারে। আর নাবালেগের অংশের মধ্যে বালেগদের অনুমতি দেওয়ার অধিকার নেই। আর নাবালেগের নিজের অনুমতি গ্রহণযোগ্য নয়।
মাসআলাঃ এমনিভাবে যে মীরাসের অংশ পাবে তার নির্দিষ্ট অংশের চেয়ে বেশি দেওয়ার ওসীয়ত করাও বাতিল। তবে এক্ষেত্রেও বালেগ ওয়ারিশের তার নিজের অংশের মধ্যে অনুমতি দেওয়া জায়েয আছে।
মাসআলাঃ ওসীয়ত করে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং তা রহিত করে দেওয়া জায়েয আছে।
মাসআলাঃ অন্তিমরোগে অর্থাৎ, যে রোগ থেকে এ ব্যক্তি আর সুস্থ হয়ে ওঠে না এবং বাহ্যত সুস্থ হয়ে ওঠার আর কোন আশাও থাকে না-দান করা, ঋণ মাফ করে দেওয়া বা অত্যাধিক সস্তা দামে কোন জিনিস বিক্রি করা এ সবই ওসীয়তের অন্তর্ভুক্ত। এগুলো এক তৃতীয়াংশ সম্পদের অতিরিক্তের মধ্যে জায়েয নেই এবং ওয়ারিশের জন্যেও জায়েয নেই। এর দ্বারা জানা গেলো যে, বেশির ভাগ মহিলা মৃত্যুর মুহূর্তে যে স্বামীকে মহর মাফ করে দেয় তা সম্পূর্ণ অর্থহীন। তবে ঐ মহিলার বালেগ ওয়ারিশ যদি মেনে নেয় তাহলে তার অংশেরটুকু মাফ হয়ে যাবে।
মাসআলাঃ কাফনের ব্যয়, ঋণ পরিশোধ এবং ওসীয়ত বাস্তবায়নের পর যে সম্পদ বাঁচবে তা সব ওয়ারিশদের যৌথ হক। কাপড়-চোপড়, বাটি-ঘাটি, বই-পুস্তক, আসবাবপত্র, টাকা-পয়সা এবং জায়গা-জমি সব যৌথ সম্পদ। কোন এক ব্যক্তি তাতে কোন প্রকারের হস্তক্ষেপ করা-নিজে ব্যবহার করে হোক-সম্পূর্ণ নাজায়েয। হিন্দুস্তানে সাধারণ প্রচলন রয়েছে যে, কেউ মারা গেলে পরিবারের প্রধান ব্যক্তি ইসালে সওয়াবের নামে অর্থহীন সব প্রথা পালন করার জন্যে তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে ব্যয় করে থাকে। এমন করলে ঐ ব্যক্তির তার নিজের অংশ থেকে সমস্ত টাকা দিতে হবে। তবে বালেগ ওয়ারিশদের ঐক্যমত্যে যা ব্যয় করবে তা তাদের সবার ভাগে পড়বে। আর যারা সুস্পষ্ট অনুমতি দিবে না বা যারা নাবালেগ সম্পত্তি বন্টনের সময় তাদের অংশ পুরাপুরি দিতে হবে।
Leave a Reply