নিয়মিত নামায আদায় করা

উৎস:
ইসলাহী নেসাব: হায়াতুল মুসলিমীন
হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:)
নামায সম্পর্কিত কিছু আয়াত এবং কয়েকটি হাদীস উদ্ধৃত করছি।
১. খোদাভীরুদের পরিচয় সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
‘তারা ঠিক ঠিকভাবে নামায আদায় করে।’ (সূরা বাকারা)
ফায়দা: যথাসময়ে উত্তমরুপে নামায পড়া এবং সবসময় পড়া সবই এর অন্তর্ভুক্ত।
২. ‘নামায ঠিক ঠিকভাবে আদায় করো।’ (সূরা বাকারা-৪৩)
ফায়দা: এরুপ ভাষায় নামায পড়ার নির্দেশ পবিত্র কু্রআনের অনেক জায়গায়ই এসেছে।
৩. ‘হে ঈমানদারগণ! (মনের দুঃখ-কষ্ট দূর করার জন্য) ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য কামনা করো।’ (সূরা বাকারা-১৫৩)
ফায়দা: এ আয়াতে নামাযের বিশেষ একটি উপকারিতা এই বর্ণনা করা হয়েছে যে, এতে মনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। আর এর প্রয়োজন সবারই রয়েছে।
৪. ‘সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও…. অতঃপর যদি (জামাআতের সাথে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নামায আদায় করতে তোমাদের শত্রুর) ভয় হয়, তাহলে পদচারণাবস্থায় অথবা আরোহণাবস্থায় (যে অবস্থায় হোক, এমনকি কেবলার দিকে যদি মুখও না থাকে এবং রুকু-সিজদা যদি ইশারা করেও করতে হয় তবুও) নামায পড়ে নাও। (এমতাবস্থায়ও নামাযের হেফাযত করো। নামায ছেড়ে দিও না।’ (সূরা বাকারা-২৩৯)
ফায়দা: প্রিয় পাঠক! চিন্তা করে দেখুন, নামাযের গুরুত্ব কত বেশী! এমন কঠিন অবস্থাতেও নামায ছাড়ার অনুমতি নেই।
৫. (যুদ্ধক্ষেত্রে সকলে একত্রে নামায পড়তে আরম্ভ করলে যদি শত্রুপক্ষ সুযোগ পেয়ে আক্রমন করার আশংকা থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় সমস্ত সৈন্যকে দু’ভাগে বিভক্ত করে) তাদের একদল আপনার সঙ্গে (আপনি থাকাবস্থায়, আর আপনার অবর্তমানে যে ইমাম হবে তার সঙ্গে নামাযে) দাঁড়াবে (এবং অন্যদল শত্রুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখবে) পরে যখন প্রথম দল (আপনার সঙ্গে) সিজদা করে (এক রাকাআত পুরা করে ফেলে) তখন এরা (শত্রুর প্রতি লক্ষ্য রাখার জন্য) পিছনে সরে যাবে এবং দ্বিতীয় দল যারা এখনো নামায আরম্ভ করেনি প্রথম দলের পরিবর্তে ইমামের নিকট চলে আসবে এবং আপনার সঙ্গে (অবশিষ্ট এক রাকাআত) নামায পড়বে। (এভাবে প্রত্যেক দলের এক রাকাআত করে পড়া হবে এবং বাকী এক রাকাআত এভাবে পড়বে যে, ইমাম যখন দু’রাকাআতের পর সালাম ফিরাবে, তখন প্রত্যেকেই নিজের অবশিষ্ট এক রাকাআত নামায পুরা করবে। আর যদি ইমাম চার রাকাআত আদায় করেন, তাহলে প্রত্যেক দলকে তিনি দু’রাকাআত করে নামায পড়াবেন আর অবশিষ্ট দু’রাকাআত তারা নিজেরা পড়ে নিবে। আর মাগরিব নামাযে প্রথম দলকে দু’রাকাআত এবং দ্বিতীয় দলকে এক রাকাআত করে পড়াবে তারপর তারা নিজেরা অবশিষ্ট নামায আদায় করে নিবে।) (সূরা নিসা-১০২)
ফায়দা: চিন্তা করে দেখুন! নামাযের গুরুত্ব কত বেশী। এমন টানাপোড়েনের মধ্যেও নামায ছাড়ার অনুমতি নেই। যদিও আমাদের প্রয়োজনের কারণে তার সুরত বদলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
৬. ‘হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য ওঠো (এর পর ওযু-গোসলের হুকুম দিয়ে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন) এবং যদি তোমরা রুগ্ন হও (পানি ব্যবহার করলে ক্ষতিকর আশংকা হয় বা পানি পাওয়া না যায়) তাহলে পাক-মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে।’
(সূরা মায়েদাহ-৬)
ফায়দা: লক্ষ্য করার বিষয় যে, অসুস্থতার কারণে পানি ব্যবহার ক্ষতিকর হলে বা না পেলে ওযু- গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করবে, একইভাবে দাঁড়ানো সম্ভব না হলে বসে পড়বে এবং বসে পড়তে না পারলে শুয়ে পড়বে কিন্ত্ত নামাজ ছাড়তে পারবে না।
৭. (‘মদ এবং জুয়া হারাম হওয়ার একটি কারণ এও বলেছেন যে, শয়তান চায় যে, এই মদ ও জুয়ার মাধ্যমে) আল্লাহ তাআলার স্মরণ থেকে এবং নামায থেকে (যা আল্লাহকে ইয়াদ করার শ্রেষ্ঠতম পন্থা) তোমাদেরকে বিরত রাখবে।’ (সূরা মায়েদা-৯১)
ফায়দা: লক্ষ্য করো! এ আয়াত দ্বারা নামাযের কত বড় মর্যাদা প্রকাশ পায় যে, যে জিনিস নামাযের প্রতিবন্ধক তাকেও হারাম করা হয়েছে, যেন নামাযে বিঘ্ন না ঘটে।
৮. (এমন একদল লোকের ব্যাপারে, যারা সর্বতভাবে ইসলামের ক্ষতি করেছে এবং মুসলমানদেরকে কষ্ট দিয়েছে- আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-)
‘যদি এরা (কুফর থেকে) তাওবা করে (অর্থাৎ, মুসলমান হয়ে যায় এবং ইসলামকে প্রকাশও করে যেমন) নামায পড়তে এবং যাকাত দিতে আরম্ভ করে, তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই হয়ে যাবে। এবং অতীতে কৃত সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।’ (সূরা তাওবা-১১)
ফায়দা: এ আয়াতে নামাযকে ইসলামের আলামত বলা হয়েছে। এমনকি কোন কাফিরকে কেউ যদি কালিমা পড়তে না শোনে, কিন্ত্ত নামায পড়তে দেখে, তাহলে সকল আলেমের ঐক্যমত যে, তাকে মুসলমান মনে করবে। আর যাকাতের যেহেতু বিশেষ কোন রুপ নেই, তাই তা এ পর্যায়ের আলামতও নয়।
৯. এক দল নবীর কথা আলোচনা করে তারপর তার পরবর্তী অযোগ্য উত্তরসূরীদের আলোচনা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
‘তাদের পর এমন কতক অযোগ্যের সৃষ্টি হলো, যারা নামায নষ্ট করল।’
(সূরা মারয়াম-৫৯)
(একটু পরে বলেন) এরা সত্বরই (আখেরাতে) মন্দ পরিণতি দেখবে। অর্থাৎ, আযাবে পতিত হবে।
ফায়দা: লক্ষ্য করো! নামায নষ্টকারীদের জন্য কেমন আযাবের ধমকি দেওয়া হয়েছে।
১০. ‘আপনার পরিবারস্থ লোকদেরকে নামাযের হুকুম করুন এবং আপনি নিজেও তার প্রতি যত্নশীল থাকুন।’ (সূরা ত্বাহা-১৩২)
ফায়দা: খোদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এভাবে হুকুম করা হচ্ছে, যাতে করে অন্যেরা বুঝতে পারে যে, যখন তারই নামায মাফ নাই, তাহলে অন্যদের তো মাফ হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ আয়াত দ্বারা আরো জানা গেলো যে, নিজে যেমন নামাযের পাবন্দী করতে হবে, তেমনিভাবে পরিবারের অন্যান্যদেরকেও নামাযের তাকীদ করতে হবে।
নামায সম্পর্কিত আরো অনেক আয়াত রয়েছে, এখানে এতটুকুর উপরই ক্ষান্ত করা হলো।
হাদীসসমূহ-
১. হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘বলো তো! কারো দরজায় যদি একটি নদী থাকে, আর ঐ নদীতে সে ব্যক্তি প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে তাহলে কি তার দেহে ময়লা থাকতে পারে? লোকেরা বললো, কোন ময়লাই থাকবে না। তিনি ইরশাদ করলেন- পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের অবস্থাও তাই। আল্লাহ তাআলা নামাযীর সমস্ত গুনাহ এর মাধ্যমে মাফ করে দেন। (বুখারী ও মুসলিম)
ফায়দা: এ হাদীস দ্বারা নামাযের কত বড় ফযীলত প্রমাণিত হয়। মুসলিম শরীফের একটি হাদীসে এর জন্য কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার শর্ত লাগানো হয়েছে। এরপরও কি এটি কম বড় সম্পদ?
২. হযরত জাবের (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘মানুষের মাঝে ও কুফুরীর মাঝে নামায ছেড়ে দেওয়াই ব্যবধান।’ (নামায ছেড়ে দিলে সে ব্যবধান উঠে যায় এবং কুফুরী এসে পড়ে। ঠিক মানুষের মধ্যে না এসে পাশে এলেও দূরত্ব তো থাকলো না) (মুসলিম)
ফায়দা: লক্ষ্য করুন! নামায পরিত্যাগ করার ব্যাপারে কত বড় ধমকি এসেছে যে, তা মানুষকে কুফুরীর নিকটবর্তী করে দেয়।
৩. হযরত আবদুর রহমান বিন আমর বিন আস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, একদিন নবী সাল্লা্ল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযের বিষয়ে আলোচনা করলেন। তিনি ইরশাদ করলেন-
‘যে ব্যক্তি নামাযের হেফাযত করবে, নামায তার জন্য কেয়ামতের দিন আলো, প্রমাণ ও পরিত্রান হবে। আর যে এর হেফাযত করবে না, নামায তার জন্য আলো, প্রমাণ ও পরিত্রাণ কোনটিই হবে না। কেয়ামত দিবসে সে ব্যক্তি কারুন, ফেরাউন, হামান ও উবাই বিন খালফের সঙ্গে থাকবে। (অর্থাৎ, যদিও তাদের সঙ্গে চিরদিনের জন্য দোযখে থাকবে না, কিন্ত্ত তাদের সঙ্গী হওয়াটাই বড় মারাত্মক ব্যাপার।’
(আহমাদ, দারামী, বাইহাকী, শুয়াবুল ঈমান)
৪. হযরত বুরাইদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘আমাদের মাঝে ও লোকদের মাঝে যে একটি অঙ্গীকারের বস্ত্ত (অর্থাৎ, অঙ্গীকারের কারণ) রয়েছে, তা হলো নামায। বিধায় যে ব্যক্তি তা ছেড়ে দিবে সে (আচরণ পাওয়ার দিক থেকে) কাফির হয়ে গেলো। (অর্থাৎ, আমরা তার সঙ্গে কাফিরদের সঙ্গে যে আচরণ করি সেই আচরণ করবো। কারণ, ইসলামের অন্য কোন নিদর্শন তার মধ্যে পাওয়া যায় না। কারণ, বেশ-ভুষা, পোশাক-আশাক ও কথাবার্তায় সবাই সমান। তাই আমরা তাকে কাফিরই মনে করবো।) (আহমাদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনু মাজা)
ফায়দা: এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, নামায ছেড়ে দেওয়াও কুফুরীর একটি আলামত।
যদিও ইসলামের অন্য কোন আলামত থাকলে নামায পরিত্যাগ করার কারণে তাকে কাফির মনে করবো না, কিন্ত্ত কুফুরীর কোন আলামত গ্রহণ করা কি সামান্য ব্যাপার!
৫ .হযরত আমর ইবনে শুয়াইব (রাযিঃ) তার পিতা থেকে এবং পিতা তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘নিজের সন্তানদেরকে তার সাত বছর বয়স হলে নামাযের জন্য তাকীদ করো। আর দশ বছর বয়স হলে তাকে নামাযের জন্য প্রহার করো।’ (আবু দাউদ)
উপরোক্ত হাদীসসমূহ মিশকাত শরীফে রয়েছে।
৬. হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, খুযাআ গোত্রের দু’জন লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে এসে মুসলমান হলেন। তাদের একজন শহীদ হয়ে গেলেন। আর অপরজন একবছর পর (স্বাভাবিকভাবে) মৃত্যুবরণ করলেন। হযরত তালহা বিন আবদুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন- আমি পরে মৃত্যুবরণকারীকে (স্বপ্নে) দেখলাম যে, তাকে শহীদ ব্যক্তির পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করানো হলো। আমি বড় আশ্চর্যান্বিত হলাম। সকালবেলা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট একথা আলোচনা করলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন- ঐ (মৃত্যুবরণকারী) ব্যক্তি কি ওর (শহীদের) পর রমাযানের রোযা রাখেনি? এবং একবছর পর্যন্ত হাজার হাজার রাকাআত নামায পড়েনি। (শুধুমাত্র ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নাতে মুয়াক্কাদার হিসাব করলেও দশ হাজার রাকাআতের কাছাকাছি হয়। (অর্থাৎ, এজন্য সে শহীদের চেয়ে অগ্রণী হয়েছে। (আহমাদ, ইবনু মাজা, ইবনু হিব্বান ও বাইহাকী)
ফায়দা: ইবনু মাজা ও ইবনু হিব্বান অতিরিক্ত এ কথাও বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ঐ দুই ব্যক্তির মর্যাদার মধ্যে আসমান ও যমীনের দূরত্বের চেয়েও অধিক তফাৎ রয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এ মর্যাদার পিছনে নামাযেরই অধিক দখল রয়েছে। তাই তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তারই আধিক্যের কথা উল্লেখ করেছেন। বিধায় নামায এমন একটি বস্ত্ত, যার উসীলায় শহীদের চেয়েও বড় মর্যাদা লাভ হয়।
৭. হযরত জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন- তিনি ইরশাদ করেন-
‘নামায বেহেশতের চাবি।’ (দারামী)
ফায়দা: নামাযকে চাবিরূপে উল্লেখ করা স্পষ্ট বলে দেয় যে, তা সমস্ত ইবাদতের চেয়ে জান্নাতে প্রবেশ করার বড় কারণ হবে।
৮. হযরত আবদুল্লাহ বিন কুরত (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
‘কেয়ামতের দিন বান্দার সর্বপ্রথম হিসাব নেওয়া হবে নামাযের। তা সঠিক হলে তার সমস্ত আমল সঠিক হবে, আর তা খারাপ হলে তার সমস্ত আমল খারাপ হবে।’ (তবরানী, আওসাত)
ফায়দা: এ হাদীস দ্বারা জানা যে, সব ইবাদতের মধ্যে নামাযের বরকতের প্রভাব পড়ে থাকে। সবচেয়ে বড় আমল হওয়ার এর চেয়ে বড় দলীল আর কি হতে পারে?
৯. হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (একটি হাদীসে একথাও) ইরশাদ করেন-
‘যার নিকট নামায নেই, (অর্থাৎ, যে নামায পড়ে না) তার নিকট দ্বীন নেই। দ্বীনের সঙ্গে নামাযের তুলনা এমন, দেহের সঙ্গে মাথার তুলনা যেমন (অর্থাৎ, মাথা না থাকলে যেমন দেহ মৃত, তেমনি নামায না থাকলে সমস্ত আমল নিষ্প্রাণ।’ (তবরানী, আওসাত ও সগীর)
ফায়দা: যে জিনিসের উপর দ্বীন এত বেশী নির্ভরশীল, তা ছেড়ে দিয়ে কোন নেক আমলকে যথেষ্ট মনে করা কত বড় ভ্রান্তি।
১০. হযরত হানযালা কাতিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছি- তিনি ইরশাদ করেন-
‘যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের হেফাযত করবে অর্থাৎ, তার রুকু, তার সেজদা ও তার সময় সবকিছুর হেফাযত করবে (অর্থাৎ, এগুলোতে কোন ত্রুটি করবে না) এবং একথার বিশ্বাস রাখবে যে, সব নামায আল্লাহর পক্ষ হতে সঠিক নির্দেশ তাহলে জান্নাত তার জন্য ওয়াজিব হয়ে যাবে এবং সে দোযখের জন্য হারাম হয়ে যাবে।’ (এসব কথার মূল অর্থ একই) (আহমাদ)
এ হাদীসগলো তারগীব গ্রন্থে রয়েছে। এখানে দশটি আয়াত এবং দশটি হাদীস মোট বিশটি দলীল তুলে ধরা হলো। হে মুসলমানগণ! এতগুলো আয়াত এবং হাদীস শুনেও কি নিয়মিত নামায পড়বে না!
Leave a Reply