উৎস:
ইসলাহী নেসাব: হুকুকুল ইসলাম
হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:)

সাধারণ মুসলমানদের হকসমূহ
আত্মীয়-স্বজন ছাড়া অনাত্মীয় মুসলমানদেরও হক রয়েছে। ইমাম ইসবাহানী (রহঃ) ‘তারগীব’ ও তারহীব’ গ্রন্থে হযরত আলী (রাযিঃ)এর বর্ণনায় নিম্নোক্ত হকসমূহ উদ্ধৃত করেছেন-
১. মুসলমান ভাইয়ের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করবে।
২. সে ক্রন্দন করলে তার প্রতি দয়া করবে।
৩. তার দোষ-ত্রুটি গোপন করবে।
৪. তার ওযর-আপত্তি মেনে নিবে।
৫. তার কষ্ট লাঘব করবে।
৬. সবসময় তার কল্যাণ কামনা করবে।
৭. তাকে দেখাশোনা করবে ও তাকে ভালোবাসবে।
৮. তার দায়িত্বের ক্ষেত্রে ছাড় দিবে।
৯. অসুস্থ হলে সেবা-শুশ্রূষা করবে।
১০. মৃত্যুবরণ করলে জানাযায় অংশ নিবে।
১১. তার দাওয়াত কবুল করবে।
১২. তার হাদিয়া কবুল করবে।
১৩. তার সদাচরণের প্রতিদান দিবে।
১৪. তার নেয়ামতের শোকর আদায় করবে।
১৫. প্রয়োজন হলে তাকে সাহায্য করবে।
১৬. তার পরিবার-পরিজনের হেফাযত করবে।
১৭. তার অভাব মোচন করবে।
১৮. তার আবেদন পুরা করবে।
১৯. তার সুপারিশ গ্রহণ করবে।
২০. তার আশা পূরণ করবে।
২১. সে হাঁচি দিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললে উত্তরে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলবে।
২২. তার হারানো জিনিস পেলে তার কাছে পৌঁছে দিবে।
২৩. তার সালামের উত্তর দিবে।
২৪. নম্রতার সাথে ও হাসিমুখে তার সাথে কথা বলবে।
২৫. তার প্রতি সদাচরণ করবে।
২৬. তোমার উপর ভরসা করে কসম খেলে তা পুরা করবে।
২৭. তার উপর কেউ জুলুম করলে তার সাহায্য করবে। সে কারো উপর জুলুম করলে তাকে বাধা দিবে।
২৮. তার প্রতি ভালোবাসা পোষণ করবে, শত্রুতা করবে না।
২৯. তাকে লাঞ্ছিত করবে না।
৩০. যে জিনিস নিজের জন্য পছন্দ করে তা তার জন্যও পছন্দ করবে।
অন্যান্য হাদীসে অতিরিক্ত এ সমস্ত হকের কথাও বর্ণিত আছে-
৩১. সাক্ষাত হলে সালাম করবে, মুসাফাহা করলে আরো ভালো।
৩২. ঘটনাচক্রে পরস্পরে মনোমালিন্য হলে তিন দিনের অধিক কথা বন্ধ রাখবে না।
৩৩. তার প্রতি মন্দ ধারণা পোষণ করবে না।
৩৪. তার প্রতি হিংসা ও বিদ্বেষ করবে না।
৩৫. সামর্থ্যমত সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করবে।
৩৬. ছোটদের প্রতি স্নেহ ও বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা করবে।
৩৭. দু’জন মুসলমানের মাঝে কলহ হলে তাদের পরস্পরে মিলমিশ করিয়ে দিবে।
৩৮. তার গীবত করবে না।
৩৯. তার ধনসম্পদ বা মান-সম্মানের কোন ক্ষতি করবে না।
৪০. যদি বাহনে আরোহণ করতে না পারে বা বাহনের উপর সামানাপত্র না উঠাতে পারে তাহলে তার সহায়তা করবে।
৪১. তাকে তুলে দিয়ে তার স্থলে বসবে না।
৪২. তৃতীয় ব্যক্তিকে একা ছেড়ে দু’জনে কথা বলবে না।
স্মর্তব্য যে, ইতিপূর্বে যে সমস্ত লোকের হকসমূহ উল্লেখিত হয়েছে, সেগুলো তাদের বিশেষ হক। এ শিরোনামে উল্লেখিত সাধারণ হকসমূহে তারাও শরীক রয়েছে।