সাধারণ লোকদের (যারা আলেম নয়) উদ্দেশ্যে নসীহত

উৎস:
ইসলাহী নেসাব: কসদুস সাবীল
হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:)
১. আলিমদের সঙ্গে খুব বেশী মেলামেশা রাখো।
২. তাদের নিকট থেকে মাসআলা জিজ্ঞাসা করতে থাকো।
৩. লেখাপড়া জানা থাকলে বেহেশতী যেওর এবং বেহেশতী গওহার বা তদস্থলে ‘সাফাইয়ে মুয়ামালাত’ এবং ‘মিফতাহুল জান্নাত’ কিতাব দেখে দেখে সে অনুপাতে আমল করতে থাকো।
৪. শরীয়তের খেলাফ পোশাক পরিধান করো না। যেমন, গিরার নীচে পায়জামা পরা, কোট-প্যান্ট পরা, রেশমের কাপড় পরা, যরদ (হলুদ) রংয়ের কাপড় পরা, চার আঙ্গুলের চেয়ে চওড়া খাঁটি সোনালী কাজ করা টুপি বা জুতা পরা।
৫. দাড়ি কাটিও না বা চাঁছিও না। তবে এক মুষ্টির অতিরিক্তটুকু ইচ্ছা হলে কাটতে পারো, ইচ্ছা হলে রাখতে পারো।
৬. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার সাহাবীদের তরীকার খেলাফ যত রুসম-রেওয়াজ চালু আছে সব পরিহার করো। সে সমস্ত রুসম-রেওয়াজ দুনিয়ার রংয়ে হোক, আর দ্বীনের রংয়ে হোক, যেমন, মিলাদ, ফাতেহাখানী, ওরশ, বিবাহ-শাদীতে গায়ে হলুদ, বরযাত্রা ও মেহমানদারীর জন্য বা নাম ফুটানোর জন্য খাবার পাকানো এবং খাওয়ানো বা নামের জন্য কিছু দেওয়া ও দেওয়ানো, আকীকা, খাতনা এবং বিসমিল্লাহ করানোর জন্য মানুষদের একত্রিত হওয়া, এ সবকিছু পরিত্যাগ করো। এ সমস্ত অনুষ্ঠান নিজের বাড়ীতেও করবে না এবং অন্যদের বাড়ীতে হলে তাতে শরীক হবে না। কেউ মারা গেলে তিন দিন, দশ দিন বা চল্লিশ দিনের অনুষ্ঠান করা, শবে বরাতের হালুয়া বা মুহাররমের শোক মিছিল ও তাজিয়া মিছিল নিজেও করবে না এবং অন্যদের নিকট গিয়ে এ সমস্ত কাজে শরীকও হবে না। মেলা বা এ জাতীয় অনুষ্ঠানে যাবে না এবং সন্তানদেরকেও যেতে দিবে না। তাদেরকে এ জাতীয় বেহুদা কাজের জন্য পয়সাও দিবে না। যেমন, ঘুড়ি, পটকা বা ছবিওয়ালা খেলনা ক্রয় করা।
৭. গীবত ও গালাগালি থেকে মুখকে হেফাযত করো।
৮. জামাআতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ো।
৯. কোন নারী বা বালকের দিকে কুনজরে তাকিও না।
১০. গান-বাদ্য শুনো না।
১১. সব কাজের জন্য পীরের কাছে তাবীজ-কবজ চেয়ো না। বরং তার নিকট থেকে দ্বীনের কথা শিক্ষা করো। তবে বিভিন্ন কাজের জন্য দু’আ করানোতে ক্ষতি নেই।
১২. এরুপ ভেবো না যে, নজরানা দেওয়ার মত কিছু নাই, তাই পীরের কাছে কীভাবে যাবো।
১৩. এরুপ মনে করো না যে, পীর সাহেব সব কিছুর খবর রাখেন, তার কাছে কিছু বলার প্রয়োজন নাই।
১৪. আধ্যাত্মিকতার কিতাব পড়ো না এবং এ ধরনের কথা জিজ্ঞাসা করো না।
১৫. তাকদীরের বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয়ো না।
১৬. পীরের কথা মতো আমল করো।
১৭. সুদ-ঘুষ নিয়ো না। বন্ধকের আয়ও সুদ, তা থেকে দূরে থাকো। শরীয়তবিরোধী সব ধরনের লেনদেন থেকে বেঁচে চলো।
১৮. মাসআলা জিজ্ঞাসা না করে স্বপ্নের কথা মত আমল করো না।
১৯. পীর সাহেবের নিকট গিয়ে তাকে কোন কাজে মগ্ন দেখলে তার কাজে বিঘ্ন ঘটাবো না। এমন জায়গাতেও বসো না, যার ফলে তোমাকে দেখে তার মন বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। বরং এক কোণায় বসে পড়ো। তিনি কাজ থেকে অবসর হলে তার সম্মুখে যাও।
২০. ‘তা’লীমুল মাতালিব’. ‘তা’লীমুদ্দীন (প্রথম চার খন্ড) এবং ‘জাযাউল আ’মাল’ সংগ্রহ করে অধ্যয়ন করো।
Leave a Reply