উৎস:
ইসলাহী নেসাব: সাফাইয়ে মুয়ামালাত
হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:)

মাসআলাঃ এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির নিকট বিশ টাকা পাবে, কিন্তু সে বললো যে, ঠিক আছে, তুমি পনেরো টাকাই দাও-এটা জায়েয আছে।

মাসআলাঃ আর যদি নির্দিষ্ট মেয়াদে বিশ টাকা পেতো, যেমন, বিশ টাকা দিয়ে কোন একটি পণ্য ক্রয় করেছিলো এবং মূল্য পরিশোধের জন্যে এক মাস বা দুই মাস সময় নিয়েছিলো। এখন পাওনাদার চায় যে, মেয়াদের পূর্বেই টাকা পরিশোধ করুক এবং উদাহরণ স্বরুপ পাঁচ টাকা কম দিক-এটা জায়েয নেই।

মাসআলাঃ এক ব্যক্তি মারা গেলো। সে কিছু মাল-সামানা এবং কিছু নগদ টাকা পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে রেখে গেলো। তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে এক ব্যক্তি অন্য উত্তরাধিকারদেরকে বললো যে, আমি আমার ভাগ বন্টন করে নিতে চাই না, আমাকে মোটের উপর উদাহরণস্বরুপ এক হাজার টাকা দিয়ে দাও। তাহলে সমস্ত পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে আমি আমার দাবী ছেড়ে দেবো-এটা জায়েয আছে। তবে এক্ষেত্রে দুটি শর্ত আছে।

একটি এই যে, পরিত্যক্ত সম্পত্তির মধ্যে যদি নগদ টাকা থেকে থাকে, তাহলে দেখতে হবে যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে এর মধ্যে ঐ ব্যক্তির অংশ কতটুকু। তার অংশ যদি এক হাজার টাকার চেয়ে কম হয় তাহলে তো এ আপোষ জায়েয আছে। আর যদি তার অংশ এক হাজার টাকা বা তার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে এ আপোষ জায়েয নেই।

দ্বিতীয় শর্ত হলো, এই নগদ টাকার মধ্যে তার যতটুকু অংশ আছে, সে পরিমাণ টাকা তাৎক্ষণিকভাবে তার দখলে দিয়ে দিতে হবে। অন্যগুলো রয়ে গেলে সমস্যা নেই। তবে মনে রাখতে হবে, গহনার বিধানও নগদ টাকার মতোই। উত্তরাধিকারীদের মধ্যে কেউ যদি নাবালেগ থাকে আর এ আপোষ যদি তার জন্যে বেশি ক্ষতিকর না হয় তাহলে তো জায়েয হবে। অন্যথায় তার অংশের মধ্যে এটি জায়েয হবে না।

মাসআলাঃ এক ব্যক্তি মারা গেলো। সে কিছু পরিত্যক্ত সম্পত্তি রেখে গেলো, আর এমন কিছু টাকা রেখে গেলো, যেগুলো সে অন্যের নিকট পায়। এমতাবস্থায় কোন উত্তরাধিকারী যদি বলে যে, পাওনা টাকাগুলো আমার অংশে দাও, আমি সেগুলো উসুল করে নেবো, আর নগদ সম্পত্তিগুলো অন্যান্য উত্তরাধিকারের মধ্যে বন্টন করে দাও-এভাবে আপোষ করা জায়েয নেই। বরং নগদ সম্পত্তিগুলো সবার মাঝে বন্টন করে দিবে, আর পাওনা টাকা যেটুকু উসুল হতে থাকবে সেগুলোও সবার মাঝে বন্টন করতে থাকবে।