উৎস:
ইসলাহী নেসাব: সাফাইয়ে মুয়ামালাত
হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:)

যায়েদ আমরকে কিছু টাকা দিলো যে, তুমি এটা দিয়ে ব্যবসা করো। আমার টাকা, তোমার শ্রম। এতে যাকিছু লাভ হবে তা আমরা দুজনে ভাগ করে নেবো-একে ‘মুযারাবা’ বলা হয়। শরীয়তের দৃষ্টিতে এটি জায়েয।

মাসআলাঃ অংশের ভিত্তিতে লাভ বন্টন করতে হবে। যেমন, অর্ধেক লাভ টাকার মালিকের, আর অর্ধেক শ্রমদাতার। বা এক তৃতীয়াংশ একজনের, আর দুই তৃতীয়াংশ অপরজনের। এভাবে অংশের ভিত্তিতে যে কোন পরিমাণে লাভ বন্টন করা বৈধ আছে। আর যদি লাভের নির্দিষ্ট একটি পরিমাণ এজনের জন্যে নির্দিষ্ট করে নেওয়া হয়-যেমন, কেউ কেউ টাকার মালিককে পাঁচ টাকা বা দশ টাকা করে প্রতি মাসে দিয়ে থাকে এবং অবশিষ্টটা শ্রমদাতা নিজে নেয়-এটা সুদ এবং হারাম।

মাসআলাঃ এমনিভাবে যদি এ সিদ্ধান্ত করে যে, লাভ হলে উভয়ে তাতে অংশীদার হবে, আর ক্ষতি হলে শুধু শ্রমদাতা তা বহন করবে, বা লাভ হলে যেমন উভয়ে তার ভাগ পাবে, তেমনি ক্ষতি হলেও উভয়ের মধ্যে তা ভাগ হবে-এ সবই বাতেল এবং নাজায়েয। ক্ষতি হলে তা সর্বাবস্থায় মূলধনের মালিকের উপরই বর্তাবে, শ্রমদাতার শুধু শ্রম বৃথা যাবে। টাকার ক্ষতি তার উপর বর্তাবে না।

মাসআলাঃ শ্রমদাতার জন্যে ঐ মূলধন ‘মুযারাবা’র ভিত্তিতে কাউকে দেওয়ার অনুমতি নেই, তবে টাকার মালিক অনুমতি দিলে কোন দোষ নেই।

মাসআলাঃ একইভাবে টাকার মালিক বিশেষ কোন জিনিসের ব্যবসা করতে বললে তার অনুমতি ছাড়া ঐ টাকা দ্বারা অন্য কোন জিনিসের ব্যবসা করা ’মুযারাব’ তথা শ্রমদাতার জন্যে জায়েয নেই।

মাসআলাঃ ’মুযারাবা’র ভিত্তিতে ব্যবসার মধ্যে কোন ক্ষতি দেখা দিলে লাভের টাকা দিয়ে তা পুরা করা হবে এবং মূলধন রক্ষিত থাকবে। ক্ষতির পরিমাণ যদি লাভের টাকার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে মূলধন থেকে তা পুরা করা হবে।

মাসআলাঃ শ্রমদাতা (মুযারিব) ব্যবসার জন্যে সফর করলে সফরকালে তার পানাহার খরচ, ভাড়া ইত্যাদির টাকা ব্যবসার টাকা থেকে ব্যয় করতে পারবে। তবে সফর থেকে ফেরার পর তা থেকে যত টাকা বাঁচবে তা ব্যবসার টাকার মধ্যে শামিল করে নিবে।