উৎস:
ইসলাহী নেসাব: যাদুস সাঈদ
হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:)

এক. হযরত আলী (রাযিঃ) বলেন-’সমস্ত দু’আ আটকে থাকে, যতক্ষণ না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার বংশধরের উপর দুরুদ পাঠ করবে।’
(মু’জামে আওসাত, তাবরানী)
দুই. হযরত ওমর ফারুক (রাযিঃ) বলেন-’দু্’আ আসমান ও জমিনের মধ্যে লটকে থাকে, যতক্ষণ না নিজের নবীর উপর দুরুদ পাঠ করে।’ (তিরমিযী)
তিন. হযরত আবূ রাফে’ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, যার কান লাফায়, সে যেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্মরণ করে এবং তার উপর দুরুদ পাঠ করে এবং এরুপ বলে যে, যে আমাকে স্মরণ করলো, আল্লাহ তাআলা যেন দয়া ও কল্যাণ দ্বারা তাকে স্মরণ করেন।
(মু’জামে কাবীর, তাবরানী, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল লাইলাহ, লি ইবনিস সুন্নী)
চার. হযরত আবূ সাঈদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, যার ইচ্ছা হয় যে, তার সম্পদ বৃদ্ধি পাক, সে যেন এভাবে দুরুদ পাঠ করে।
পাঁচ. হযরত ইবনে আব্বাস (রাযিঃ)এর নিকট একজন লোক বসা ছিলো। তার পা অবশ হয়ে যায়। তিনি বললেন যে, যে ব্যক্তি তোমার সবচে’ প্রিয়, তার নাম লও। সে বললো-সাথে সাথে তার অবশ ভাব কেটে যায়। (হাদীসে মওকূফ, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল লাইলাহ, লি ইবনিস সুন্নী)
ছয়. একবার হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ)এর পা অবশ হয়ে যায়। তিনি এ আমল করেন। সাথে সাথে তার অবশ ভাব কেটে যায়। (হাশিয়ায়ে হিসন, মিআতুল ফাওয়ায়িদ)
সাত. হাদীস শরীফে সমস্ত অভাব মোচনের জন্য সালাতুল হাজত পড়ার কথা এসেছে। তার মধ্যে নামায শেষে দুরুদ শরীফ পাঠ করা হয়। তাতে বোঝা যায় যে, অভাব মোচনের ক্ষেত্রে দুরুদ শরীফের ভূমিকা রয়েছে।
আট. কুরআন শরীফ হিফয করার দু’আ হাদীস শরীফে এসেছে। ঐ দু’আর সাথেও দুরুদ শরীফ পাঠ করা হয়। তাতে বোঝা যায় যে, কুরআন মাজীদ হিফয করার মধ্যেও দুরুদ শরীফের দখল রয়েছে।
নয়. আবূ মূসা মাদীনী ‘যয়ীফ সনদে’ বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-’তোমরা কোন জিনিস ভুলে গেলে আমার উপর দুরুদ পাঠাও, তাহলে তা স্মরণ হবে, ইনশাআল্লাহু তাআলা।’ (ফাযায়েলে দুরুদ ও সালাম)
দশ. দুরুদ শরীফের সবচে’ বেশী মজার ও মধুর বৈশিষ্ট্য এই যে, এর বদৌলতে স্বপ্নযোগে নবী-প্রেমিকগণের হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যিয়ারত নসীব হয়েছে। বিশেষভাবে কতগুলি দুরুদ বুযুর্গদের পরীক্ষিত।
(ক) শাইখ আবদুল হক দেহলভী (রহঃ) ‘তারগীবু আহলিস সাআদাহ’ কিতাবে লিখেছেন যে, জুমুআর রাতে দু’রাকআত নফল নামায পড়বে। প্রত্যেক রাকআতে এগার বার ‘আয়াতুল কুরসী’ এবং এগার বার ‘কুল হুয়াল্লাহু’ পড়বে এবং সালামের পর একশ’ বার নিম্নের এই দুরুদ শরীফ পাঠ করবে, তাহলে তিন জুমুআও অতিক্রম করবে না, ইনশাআল্লাহ যিয়ারত নসীব হবে। দুরুদ শরীফটি এই-
(খ) তিনি আরো লিখেছেন যে, যে ব্যক্তি দু’রাকআত নামায পড়বে। প্রতি রাকআতে সূরায়ে ফাতিহার পর পঁচিশবার সূরায়ে ইখলাস পাঠ করবে এবং সালামের পর নিম্নের এই দুরুদ শরীফ এক হাজার বার পাঠ করবে, তার যিয়ারত নসীব হবে। দুরুদ শরীফটি এই-
(গ) শাইখ আরো লিখেছেন যে, শোয়ার সময় সত্তর বার নিম্নের এই দুরুদ শরীফটি পাঠ করলে যিয়ারত নসীব হয়-
(ঘ) যিয়ারতের জন্য নিম্নের দু’আটিও শোয়ার সময় কয়েকবার পাঠ করার কথা শাইখ আবদুল হক দেহলভী (রহঃ) লিখেছেন-তবে এ সৌভাগ্য লাভের সবচে’ বড় শর্ত হলো, অন্তর আগ্রহে পরিপূর্ণ থাকতে হবে এবং যাহেরী ও বাতেনী সবধরনের গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। (ফাযায়েলে দুরুদ ও সালাম)